৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায়: মিশ্রণ- বিষয় সংক্ষেপ এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়গুলো সংক্ষেপে
জেনে রাখি
Ø কোনো তরল পদার্থ থেকে অদ্রবণীয় পদার্থ বা ভাসমান কঠিন পদার্থকে ছেঁকে পৃথক করার প্রণালিকে পরিস্রাবণ বলে।
Ø কোনো তরল পদার্থকে তাপের সাহায্যে বাষ্পে পরিণত করাকেই বাষ্পীভবন বলে।
Ø যে দ্রাবক প্রায় সব রকমের পদার্থকে দ্রবীভূত করতে পারে তাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলে।
Ø জলীয়বাষ্প অথবা অন্য বায়বীয় পদার্থকে যথেষ্ট পরিমাণে ঠান্ডা করে তরল অবস্থায় পরিণত করার পদ্ধতিকে ঘনীভবন বলে।
Ø কলয়েড (Colloid) হলো এমন একটি মিশ্রণ যেখানে এক পদার্থের ক্ষুদ্র কণাগুলি অন্য পদার্থের মধ্যে সমভাবে ছড়িয়ে থাকে, কিন্তু তারা দ্রবীভূত হয় না। এটি একটি অ-সমবায়ী মিশ্রণ, যার কণাগুলির আকার সাধারণত ১ ন্যানোমিটার থেকে ১০০০ ন্যানোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
Ø সাধারণত কলয়েডে বিদ্যমান ভাসমান কণাগুলোর আকার ১-১০০০ ন্যানোমিটার হয়ে থাকে। আর যদি কণাগুলোর আকার ১ মাইক্রোমিটার বা তার বেশি হয়, তখন এটি আর কলয়েড না হয়ে সাসপেনসনে পরিণত হয়।
Ø দুধ পানি ও চর্বি দিয়ে তৈরি বলে একে কলয়েড বলা হয়।
Ø সম্পৃক্ত দ্রবণে সামান্য পরিমাণে দ্রব যোগ করে অনেক নাড়লেও দ্রব আর দ্রবীভ‚ত হয় না, পক্ষান্তরে অসম্পৃক্ত দ্রবণে দ্রব যোগ করে নাড়া দিলে দ্রবণটি সম্পৃক্ত দ্রবণে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত দ্রব দ্রবীভ‚ত হতেই থাকে।
Ø কোমল পানীয়, নদ-নদী, খাল-বিল বা প্রাকৃতিক জলাশয়ের পানি, ফরমালিন প্রভৃতি হলো তরল-গ্যাস দ্রবণ।
Ø ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানি ফুটতে শুরু করে ও বাষ্পে পরিণত হয়।
Ø বাষ্প তরলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলা হয়।
সংক্ষিশপ্ত উত্তর প্রশ্ন
1) ফলের রস কোন প্রকারের মিশ্রণ?
উত্তর: ফলের রস সমস্বত্ব মিশ্রণ।
2) একটি দ্রবণে কয়টি অংশ থাকে?
উত্তর: একটি দ্রবণের দুটি অংশ থাকেÑ দ্রব এবং দ্রাবক।
3) জলীয় দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তর: যেসব ক্ষেত্রে পানি দ্রাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে জলীয় দ্রবণ বলা হয়।
4) পরিস্রাবণ কী?
উত্তর: কোনো তরল পদার্থ থেকে অদ্রবণীয় পদার্থ বা ভাসমান কঠিন পদার্থকে ছেঁকে পৃথক করার প্রণালিকে পরিস্রাবণ বলে।
5) বাষ্পীভবন কী?
উত্তর: কোনো তরল পদার্থকে তাপের সাহায্যে বাষ্পে পরিণত করাকেই বাষ্পীভবন বলে।
6) ছাঁকন কাকে বলে?
উত্তর: যে পদ্ধতিতে কোনো তরল পদার্থ থেকে অদ্রবণীয় কঠিন পদার্থকে পৃথক করা হয় তাকে ছাঁকন বলে।
7) সার্বজনীন দ্রাবক কাকে বলে?
উত্তর : যে দ্রাবক প্রায় সব রকমের পদার্থকে দ্রবীভ‚ত করতে পারে তাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলে।
8) ঘনীভবন কাকে বলে?
উত্তর : জলীয়বাষ্প অথবা অন্য বায়বীয় পদার্থকে যথেষ্ট পরিমাণে ঠাÐা করে তরল অবস্থায় পরিণত করার পদ্ধতিকে ঘনীভবন বলে।
9) বাষ্পীভবন ও ঘনীভবন পদ্ধতি একত্রে ব্যবহার করাকে কী বলে?
উত্তর : বাষ্পীভবন ও ঘনীভবন পদ্ধতি একত্রে ব্যবহার করাকে পাতন বলে।
10) দুধে চর্বির কণাগুলো কোন দশায় আছে?
উত্তর : দুধে চর্বির কণাগুলো ডিসপারসড ফেজ রূপে থাকে।
11) পানিতে চিনির মিশ্রণ এবং পানিতে বালির মিশ্রণ একনয় কেন?
উত্তর : পানিতে চিনি যোগ করে নাড়তে থাকলে চিনি পানিতে দ্রবীভূত হয়ে সমস্বত্ব মিশ্রণ তৈরি করে। এ অবস্থায় পানি-চিনির একটি দ্রবণ তৈরি হয়। এর বিভিন্ন অংশের উপাদান, গঠন ও ধর্ম একই থাকে।
পানিতে বালি যোগ করে নাড়তে থাকলে বালি পানিতে দ্রবীভ‚ত না হয়ে পাত্রের তলায় তলানি হিসেবে জমতে থাকে। এতে অসমস্বত্ব মিশ্রণ তৈরি হয়।
12) ঘন ও পাতলা দ্রবণ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: সমান আয়তনের দ্রবণের ক্ষেত্রে যেটিতে দ্রবের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকে সেটি ঘন দ্রবণ, আর যেটিতে তুলনামূলকভাবে দ্রবের পরিমাণ কম থাকে সেটি হলো পাতলা দ্রবণ।
13) লবণ ও পানির দ্রবণে দ্রব এবং দ্রাবকের নাম লেখ।
উত্তর: দ্রবণের মধ্যে খাবার লবণ কম পরিমাণে থাকে আর পানি বেশি পরিমাণে থাকে। তাই খাবার লবণ হলো দ্রব আর পানি হলো দ্রাবক।
14) রাসায়নিক পদার্থের স্বাদ গ্রহণ করা উচিত নয় কেন?
উত্তর: বেশিরভাগ রাসায়নিক পদার্থই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই কোনো দ্রবণ বা রাসায়নিক পদার্থ সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এটি খেয়ে স্বাদ পরীক্ষা করা কোনো মতেই উচিত নয়।
15) একটি লবণের দ্রবণ সম্পৃক্ত না অসম্পৃক্ত কীভাবে শনাক্ত করবে?
উত্তর: একটি লবণের দ্রবণ সম্পৃক্ত না অসম্পৃক্ত জানতে হলে দ্রবণকে একটি টেস্টটিউবে নিয়ে এর মধ্যে আর কিছু দ্রব যোগ করে ভালো করে ঝাঁকানো হয় :
i. দ্রব যদি দ্রবীভূত না হয়ে টেস্টটিউবের তলায় থিতিয়ে পড়ে এবং দ্রবণের গাঢ়ত্ব একই থাকে, তাহলে বুঝতে হবে ঐ দ্রবণটি সম্পৃক্ত।
ii. দ্রব যদি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত হয় এবং দ্রবণের গাঢ়ত্ব বৃদ্ধি পায় তাহলে বুঝতে হবে ঐ দ্রবণটি অসম্পৃক্ত।
16) চিনির দ্রবণীয়তা লবণের চেয়ে বেশি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ তরল পদার্থে সকল বস্তু সমান পরিমাণে দ্রবীভ‚ত হয় না। ১০০ সিসি পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভ‚ত হয় সেই একই পরিমাণ পানিতে সমপরিমাণ লবণ দ্রবীভ‚ত হয় না। লবণের চেয়ে চিনি পানিতে অনেক বেশি পরিমাণে দ্রবীভ‚ত হয়। সাধারণ তাপমাত্রায় চিনি লবণের চেয়ে ৬ গুণ বেশি দ্রবীভ‚ত হয়। সুতরাং চিনির দ্রবণীয়তা লবণের চেয়ে অনেক বেশি।
17) বালি ও পানির মিশ্রণকে দ্রবণ বলা যায় না কেন?
উত্তর: বালি ভারী অদ্রবণীয় পদার্থ। যে ভারী অদ্রবণীয় পদার্থ পাত্রের তলায় জমা হয় তাকে তলানি বলে। কোনো মিশ্রণে তলানি পড়লে তাকে দ্রবণ বলা যায় না। তাই বালি ও পানির মিশ্রণকে দ্রবণ বলা যায় না।